তাজহাট রাজবাড়ী বা তাজহাট জমিদার বাড়ী বাংলাদেশের রংপুর শহরের অদূরে তাজহাটে অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক প্রাসাদ যা এখন জাদুঘর হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
কেরামতিয়া মসজিদ সম্পর্কে আলোচনার আগে যার নামের সঙ্গে এ মসজিদটির সর্ম্পক একান্তভাবে জড়িত তাঁর সর্ম্পকে একটু আলোকপাত করা প্রয়োজন।
১৮০০-১৮৭৩ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশের ইসলামি সংস্কার আন্দোলনের সর্বাপেক্ষা সফলকাম ব্যক্তি ও গৌরবান্বিত ব্যক্তি মাওলানা কেরামত আলী (রাঃ) জৈনপুরে ১২১৫ হিজরী ১৮ মহরম জন্মগ্রহণ করেন। সারা জীবন তিনি ইসলাম প্রচারের জন্য আত্মনিবেদিত ছিলেন। রংপুরে তিনি ইসলাম প্রচারের জন্য আসেন এবং কেরামতিয়া মসজিদে চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন।
উল্লিখিত মসজিদটি আয়তাকার । এর ভিতরের পরিমাপ ৪২ ফিট x ১৩ ফিট। পূর্ব ও পশ্চিম দেয়ালের প্রশস্ততা ৩ ফিট ৩ ইঞ্চি, উত্তর ও দক্ষিণ দেয়ালের প্রশস্ততা ২ ফিট ১০ ইঞ্চি। সম্ভবতঃ আধুনিকায়ন ও সংস্কার হেতু পরিমাপের ক্ষেত্রে কিছুটা বৈসাদৃশ্য পরিলক্ষিত হয়। সমতল ভূমি থেকে মসজিদের উচ্চতা ১৮ ফিট।
মসজিদটি তিনটি (উঁচু) গোলাকার গম্বুজ বিশিষ্ট। গম্বুজগুলো অষ্টকোনা ড্রামের উপর ভর করে নির্মিত। প্রতিটি গম্বুজের নিম্নাংশে মারলন অলংকরণ রয়েছে এবং গম্বুজের মধ্যে প্রস্ফুটিত পদ্মফুলের উপরে কলসমোটিফ ফিনিয়াল বা চূড়া স্থাপিত করা হয়েছে।
মসজিদটির প্রতিটি কোণে অষ্টভূজাকৃতি স্তম্ভ রয়েছে যার উপরে শোভা পাচ্ছে কিউপলা। এছাড়াও নির্দিষ্ট দূরত্ব রেখে বিভিন্ন খিলনাকৃতি ও প্যানেলের অলংকরণের পাশাপাশি ব্যান্ডের উপস্থিতিও লক্ষ্য করা যায়। এছাড়াও মিহরাব,খিলান ও প্রধান প্রবেশদ্বারের উভয় পাশে অষ্টকোণাকৃতি স্তম্ভেও সন্নিবেশ দেখা যায় যার শীর্ষভাগে কিউপলা স্থাপিত রয়েছে। অপরদিকে উভয় খিলানের এবং পূর্বদিকের অপর দু’প্রবেশদ্বারের ও উল্লিখিত দরজার (উত্তর ও দক্ষিন কোণে অবস্থিত) উভয়দিকে ক্ষীণ স্তম্ভ (বিলা্স্টার) মূল দেওয়ালের সাথে যুক্ত দেখা যায়। এ স্তম্ভগুলোর উপরিভাগ পত্র পল্লব দ্বারা সুশোভিত এবং নিম্নাংশ কলসাকৃতির।
এ মসজিদের প্যারাপেট বা ছাদের কিনারায় মারলন অলংকরণ লক্ষ্য করা যায়। প্রধান প্রবেশদ্বারগুলো চারকোনা খিলনাকৃতি এবং প্রতিটি প্রবেশদ্বারের উভয় দিকে পিলাস্টারের সন্নিবেশ রয়েছে।
প্রতিটি প্রবেশদ্বারে মিহরাব ও খিলানের অভ্যন্তরীণ অংশের (ফ্রেনটনের) উপরিভাগে মারলন অলংকরণের সাথে লতাপাতা জড়ানো ফুলের নকশা দিয়ে সুশোভিত করা হয়েছে । এ মসজিদের উত্তর ও দক্ষিন দেওয়ালে অবস্থিত কথিত দরজার কাঠামো পরিলক্ষিত হয়। সম্ভবতঃ এগুলো আলো বাতাস প্রবেশ ও বেরুবার জন্যই পথ হিসেবে নির্মিত হয়েছিল। এ দরজার কাঠামোগুলোর কিছু অংশ মসজিদের মূল দেওয়ালের বর্ধিত অভ্যন্তরীণ উভয় ক্ষেত্রে উদগত দেখা যায় এবং শীর্ষদেশে মারলন অলংকরণ লক্ষ্য করা যায়।
এ মসজিদের প্রতিটি গোলাকার গম্বুজের (অভ্যন্তরীণ) নিচে সারিবদ্ধভাবে মারলন অলংকরণ দেখা যায় এবং গম্বুজগুলো স্কুইন্স ও পেনডেনটিভ (ঝুলন্ত) খিলানের আর্চের উপর ভর করে সুকৌশলে নির্মিত।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস